দারুচিনির উপকারিতা:

দারুচিনিকে আমরা মসলা হিসেবে চিনি। আমরা দারুচিনি গুঁড়া বা গোটা দারুচিনি বিশেষ করে যেকোনো মাংস রান্নায় ব্যবহার করি কারণ এই মশলা খাবারের স্বাদ দ্বিগুণ করে। তাছাড়া কোনো মিষ্টি খাবার যেমন সেমাই, পায়েস, হালুয়া, মিষ্টি ইত্যাদিতে দারুচিনি ব্যবহার না করলে কোনো স্বাদ বা সুন্দর গন্ধ বের হবে না। আমরা যখন দারুচিনিকে এত বেশি ব্যবহার করি কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না যে দারুচিনি আমাদের শরীরের জন্যও অনেক উপকারী। আসুন জেনে নিই দারুচিনির কিছু আশ্চর্যজনক স্বাস্থ্য উপকারিতা।

1. রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ করে:

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে দারুচিনি আমাদের শরীরের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য দারুচিনি উপকারী।

2. পেটের যেকোনো সমস্যা দূর করে:

পেটের সমস্যার সবচেয়ে সহজ ঘরোয়া প্রতিকার হল দারুচিনি কারণ এই মসলা আমাদের শরীরে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে। দারুচিনি চা, দারুচিনির গুঁড়া, দারুচিনির তেল আমাদের পেটের সমস্যায় খুব ভালো।

3. ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:

দারুচিনির বিভিন্ন উপাদান আমাদের শরীরে গ্যাস্ট্রিক, ক্যান্সার, টিউমার এবং মেলানোমা রোগ প্রতিরোধ করে।

4. বাতের ব্যথা উপশম করে:

দারুচিনিতে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ যা শক্তিশালী হাড়, রক্ত এবং শরীরের অন্যান্য টিস্যু তৈরিতে সাহায্য করে। যাদের বাতের ব্যথার সমস্যা আছে তারা যদি দারুচিনির তেল বা চা পান করেন তাহলে বাতের ব্যথার সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

5. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট:

দারুচিনির প্রয়োজনীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী এবং দারুচিনি বিশ্বের সেরা ৭টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

6. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে:

দারুচিনি আমাদের শরীরে রক্তকে তরল করতে সাহায্য করে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং বিকাশে সাহায্য করে। 7. পেশী ব্যথা উপশম করে: শরীরের বেদনাদায়ক জায়গায় দারুচিনির তেল মালিশ করলে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায় এবং ব্যথা কমে যায়।

8. মাথাব্যথা দূর করে:

দারুচিনি দিয়ে এক কাপ চা বানিয়ে দেখবেন মাথা ব্যথা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যাবে।

দারুচিনি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

দারুচিনির ঔষধি গুণের প্রধান উৎস হল সিনামালডিহাইড। প্রতিদিন দারুচিনি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। গবেষণা দেখায় যে দারুচিনি ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা 10-29 শতাংশ কমাতে পারে।
সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট উপশম করে।
হরিতকি গুঁড়া ও দারুচিনি একসঙ্গে খেলে হজমের সমস্যা দূর হয়।
ঘনত্ব উন্নত করে। আলঝেইমার এবং পারকিনসনের মতো মস্তিষ্কের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
7. হৃদরোগ এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

দারুচিনি পাউডারের পুষ্টিগুণ
• নিয়মিত দারুচিনির গুঁড়ো খেলে রক্তে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে।
• আজকাল বেশিরভাগ সময়ই কাটে মোবাইল বা কম্পিউটার স্ক্রিনের সামনে। ফলে শুষ্ক চোখের সমস্যা বেশি দেখা যায়, তাই চোখ রক্ষা করতে চাইলে নিয়মিত দারুচিনি খাওয়া শুরু করতে হবে। এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ড্রাই আই সিনড্রোম প্রতিরোধ করে এবং চোখ রক্ষা করতে সাহায্য করে।
• নিয়মিত দারুচিনি সেবন মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যে অবদান রাখে। দারুচিনির পুষ্টিগুণ নিউরনের কর্মক্ষমতা বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের মোটর ফাংশন উন্নত করে। যা মস্তিষ্কের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা কমায়।
• দারুচিনিতে সিনামালডিহাইড নামক একটি অপরিহার্য তেল থাকে। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে কাজ করে।
• প্রথমত, দারুচিনি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে দেখানো হয়েছে। যা রক্তকে বিশুদ্ধ রাখতে এবং হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে ভূমিকা রাখে।
• শরীরকে রোগমুক্ত ও সুস্থ রাখতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভূমিকা অনন্য। এছাড়াও, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলি শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন এবং পদার্থ দূর করতেও কাজ করে। দারুচিনিতে উপস্থিত শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ভালো শারীরিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে কাজ করে।